অনুসন্ধানী রিপোর্ট

পতনের বাজারে স্বল্প মূলধনি কোম্পানীর দাপট!

সোমবার ও বড় পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে শেয়ারবাজারের লেনদেন
Written by sharebazarU

দরপতন দিয়ে শুরু হওয়া নতুন সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে বা ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির ৬টি আর ২০টি কোম্পানির ১৫টিই স্বল্প মূলধনি।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা ও দুর্ভিক্ষের শঙ্কা নিয়ে আলোচনার মধ্যে দেশের পুঁজিবাজারে যে নতুন করে হতাশা দেখা দিয়েছে, তাতে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলো ঘুমিয়ে থাকার মধ্যে কেবল মূলধন বা শেয়ার সংখ্যা কম, এমন বেশকিছু কোম্পানির দর অস্বাভাবিক হারে লাফাচ্ছে।

গত আড়াই মাস ধরে তুমুল আলোচিত বেক্সিমকো ও ওরিয়ন গ্রুপের কোম্পানিগুলোর দাপট কমেছে। গত বছর ওটিসি মার্কেট থেকে মূল বাজারে পড়েছে, এমন তিনটি কোম্পানির শেয়ারদর এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে।

রোববার ডিএসইর লেনদেন সামগ্রিকভাবে বিনিয়োগকারীদেরকে আরও হতাশ করেছে। যতগুলো কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে তার চেয়ে দেড়গুণ শেয়ারের দর কমেছে।

১২৭টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে দরবৃদ্ধি হয়েছে ৮৩টির। আর আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১৬১টি কোম্পানির শেয়ার, যার সিংহভাগই ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্যস্তরে লেনদেন হয়েছে।

সব মিলিয়ে সূচক কমেছে ১৫ পয়েন্ট, সেই সঙ্গে লেনদন কমেছে ৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৩৪৩ কোটি ১২ লাখ ৪ হাজার টাকার শেয়ার যা আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ছিল ১ হাজার ৪১০ কোটি ৯২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।

স্বল্প মূলধনি

সবচেয়ে বেশি দরবৃদ্ধি পাওয়া রংপুর পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকা। গত পাঁচ বছরের আর্থিক প্রতিবেদন ঘেঁটে দেখা যায়, ২০২০ সালে ছাড়া প্রতি বছরই চার টাকার কাছাকাছি আয় করেছে কোম্পানি, এমনকি ওই বছরই কোম্পানির আয় তিন টাকার ওপরে ছিল।

১০ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১৬ টাকা ৭০ পয়সায়। আগের দিনের ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১৯৭ টাকা।

দর বৃদ্ধির চতুর্থ স্থানে থাকা সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির দর বেড়েছে ৯.৯৩ শতাংশ। এর পরিশোধিত মূলধন ৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ১০ হাজার টাকা। লভ্যাংশের ইতিহাস ভালো নয়, কোম্পানির আর্থিক ভিত্তিও খুব একটি শক্তিশালী নয়।

বৃহস্পতিবার শেয়ারদর ছিল ৫৯ টাকা ৪০ পয়সা, বেড়ে হয়েছে ৬৫ টাকা ৩০ পয়সা। এর চেয়ে বেশি বাড়া সম্ভব ছিল না এক দিনে।

৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের দুর্বল কোম্পানি আজিজ পাইপ, ৩০ কোটি টাকা মূলধনের তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার পেপার প্রসেসিং এবং ৯ কোটি ৪০ লাখ টাকার বিডি ল্যাপস ছিল এদিন দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ ১০টি কোম্পানিতে।

এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের মূলধনও খুব একটি বেশি নয়, ৯৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, তৃতীয় স্থানে থাকা এডিএন টেলিকমের মূলধন ৬৪ কোটির কিছু বেশি, আর পঞ্চম স্থানে থাকা আমরা টেকনোলজিসের মূলখত ৬১ কোটি টাকার কিছুটা বেশি।

এই তালিকার ১১ থেকে ২০ নম্বরে থাকা ১০টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকার নিচে, একটির ১৬ কোটি একটির ২২ কোটি একটির ২৬ কোটি টাকা।

এর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে থাকা কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম ৮.৭৩ শতাংশ দর বেড়েছে বিডি ল্যাপসের।

আর একাদশ থেকে উনবিংশ স্থানে থাকা স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর দর বেড়েছে ৬.১৪ শতাংশ থেকে ৮.৭৩ শতাংশ পর্যন্ত।

সূচক বেড়েও পরে পতন

লেনদেন শুরু পরেই দরবৃদ্ধির সঙ্গে ৯টা ৩৪ মিনিটে সূচক বেড়ে যায় ১৯ পয়েন্ট। ১২ মিনিট পরেই সেখান থেকে ১৬ পয়েন্ট কমে গেলেও আগের দিনের চেয়ে ৫ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল।

এরপর আবারও দরবৃদ্ধি সকাল ১০টা ২৪ মিনিটে সূচক নিয়ে যায় ৬ হাজার ৫২৭ পয়েন্টে, যা আগের দিনের চেয়ে ৩৩ পয়েন্ট বেশি এবং দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান।

এরপর কিছুটা দরপতন হলেও ১০টা ৫১ মিনিট থেকে ১১ টা ২৯ মিনিট পর্যন্ত সময়েও সূচক আগের দিনের চেয়ে বেড়ে লেনদেন হতে দেখা যায়।

এই সময়ের পরে যে দরপতন তা থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সূচক। দিন শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স হারিয়েছে ১৫ পয়েন্ট।

About the author

sharebazarU

Leave a Comment