বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ)সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান। তিনি ইবিএল সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ। ব্যাংক-বীমা, মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজসহ বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রায় তিন যুগ ধরে দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।
তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। আর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
সোমবার (০৮ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ভবনে ইস্যু ম্যানেজারদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ‘রোল অব ইস্যু ম্যানেজারস আইপিও অ্যাপ্লিকেশন’ শীর্ষক এক সেমিনারে সায়েদুর রহমান বলেন-“আইপিও শেয়ার লেনদেনের শুরুতেই যখন শেয়ার দর ৩০ টাকা বা ৪০ টাকা হয়, তখন আইপিও শিকারীরা বিক্রি করে টাকাটা নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা মূলত ক্রিমটা নিয়ে ভেগে পড়ছে।”
“আইপিও শেয়ার লেনদেনের শুরুতেই যখন শেয়ার দর ৩০ টাকা বা ৪০ টাকা হয়, তখন আইপিও শিকারীরা বিক্রি করে টাকাটা নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা মূলত ক্রিমটা নিয়ে ভেগে পড়ছে।”
ছায়েদুর রহমান বলেন যে ২০০৫ বা ২০০৬ অবধি আইপিওতে ১০০ টাকার শেয়ারের দাম ২০০ টাকা ছিল না। যদি এটি এক বা দুটি হয়, এটি হতে পারে। একটি আমার মনে আছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক 50 টাকার প্রিমিয়ামে আসছিল, তাই ওয়েটারের দাম 200 টাকা ছিল কিন্তু আজ আপনি হাবিজাবি যাই নিয়ে আসুন না কেন, দাম চার থেকে পাঁচগুণ হয়ে যাচ্ছে। যখন চার থেকে পাঁচগুণ হয়, তখন সেই অর্থ বাজারের বাইরে চলে যায় আইপিও শিকারিদের মাধ্যমে। আজ কোনও সংস্থার তালিকাভুক্তির পরে যদি 10 টাকার শেয়ার 12 টাকায় লেনদেন হয়, তবে এক বছর পরে লভ্যাংশ ঘোষণা করা হলে তা আরও বেড়ে যেত। তারপরে বিনিয়োগকারীরা লভ্যাংশের জন্য শেয়ারগুলি রাখতেন।
কেন শেয়ারের দাম 12 টাকা বা 15 টাকায় নয় 23 টাকা বা 40 টাকায়? কমিশনের আন্তরিকতার কোনও ঘাটতি নেই। পূর্ববর্তী কমিশন 50 শতাংশ সার্কিট ব্রেকারগুলির মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। এমনকি এটি কাজ করে না। সকাল 10: 15 এ, সার্কিট ব্রেকারগুলির 50 শতাংশ সর্বোচ্চ সীমাতে দেওয়া হয়।
এর আগে যখন আইপিও রুল পরিবর্তন করা হয়েছিল, তখন প্রথম দিনেই ফ্রি ফ্লোট শেয়ারের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবও দিয়েছিলাম। কেউ দেখত না। সুতরাং যে বিনিয়োগকারী এটি ৮০ টাকায় কিনেছেন তারা আজ ৪০ টাকা বা ৪৫ টাকায় এসে কাঁদছেন। কে তাকে 80 টাকায় কিনে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। আজ এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী আছেন যারা বলেন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিক্রি করছেন আর যদি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বিক্রি না করে তবে তারা কি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের লাভজনক করার জন্য দায়িত্ব গ্রহণ করবেন? অন্ধ হাতি দেওয়ার মতো পক্ষ থেকে একে অপরের সমালোচনা করে আমাদের এই সমালোচনা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
বিএসইসিকে অনুরোধ করে ছায়েদুর রহমান বলেন, “এখানে আমাদের আইনী বাধ্যবাধকতা থাকায় আমরা প্রথম দিন কীভাবে শেয়ারটি সরবরাহ করব।” স্পনসর বা ডিরেক্টরদের 30 শতাংশ শেয়ার রাখা দরকার। এই ৩০ শতাংশ শেয়ার ব্যতীত, বাকি 60০ শতাংশ বিনামূল্যে। আমরা কীভাবে প্রথম দিন থেকে এই সরবরাহ বাড়িয়ে তুলতে পারি এবং নীচে থেকে দাম তৈরি করা হয় তবে কারও সমালোচনা হবে না।
ছায়েদুর রহমান বলেন, পুঁজিবাজারে অস্থিরতা চলছে। এজন্য আইপিও প্রক্রিয়া দায়ী। এ কারণে আইপিওতে নজর দিতে হবে।তিনি বলেন, মার্চেন্ট ব্যাংকারদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে করপোরেট অ্যাডভাইজারিও করতে হয়। এছাড়াও কোম্পানির অডিট রিপোর্টের ক্ষেত্রে ফাইন্যান্সিয়াল রির্পোটিং কাউন্সিলকে শক্তিশালী ভুমিকা রাখার আহ্বান জানান তিনি।
ছায়েদুর রহমান বলেন, আইপিওর মাধ্যমে একমাত্র ক্যাপিটাল মার্কেটকে বড় করার জন্য নতুন ইস্যু আসবে, নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্ত হবে। তার সাথে আবার ছোট ছোট সেভিংস যেগুলো আছে সেগুলো বাজারের মাধ্যমে কাজ করে শিল্পায়নে বা ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য আমরা এই ইস্যু নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম কথা শুনি। বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংকারদের উপরই পুরো ব্লেমটা আসে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অডিটরদের উপর আসে। আমরা তো পেশাগত দায়িত্ব পালন করছি।দেশের শিল্পায়নের স্বার্থে আমরা একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার চাই।