পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, করোনা পরিস্থিতির অবনতি হলেও পুঁজিবাজার বন্ধ হওয়ার আশংকা নেই। ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারও খোলা থাকবে।
আজ রোববার (২১ মার্চ) ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) ও শীর্ষ ১০ ব্রোকারহাউজের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
বিএসইসির সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। সভায় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ রেজাউল করিম, ডিবিএর সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন, বিএমবিএ সভাপতি মোঃ ছায়েদুর রহমান, ডিবিএ ও বিএমবিএর উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং শীর্ষ ১০ ব্রোকারহাউজের প্রধান নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, বৈঠকে ব্রোকারহাউজগুলো তাদের ডিলার অ্যাকাউন্টে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি আইনী বিষয়কে কিছুটা বাধা বলে উল্লেখ করেন। ১৯৮৭ সালে প্রণীত একটি আইন অনুসারে, গ্রাহকদের পাশাপাশি ব্রোকার তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে চাইলে আগে গ্রাহকের ক্রয়-আদেশ কার্যকর করতে হবে। পরে ডিলার অ্যাকাউন্টের ক্রয়-আদেশ বাস্তবায়ন হবে। এই শর্তের কারণে ডিলারদের বিনিয়োগ কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তারা।
এর প্রেক্ষিতে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, ১৯৮৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আলোচিত আইনী শর্ত পরিপালনের বিষয়ে কোনো কঠোর অবস্থানে যায়নি বিএসইসি। কেউ আইনের ওই শর্তটি লংঘন করলেও সেটিকে নন-কমপ্লায়েন্স বিবেচনা করা হয়নি, কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি। এবারও বিষয়টিকে নন-কমপ্লায়েন্স হিসেবে গণ্য করা হবে না। তাই কোনো ব্রোকার চাইলে গ্রাহকের আগে তার ডিলার অ্যাকাউন্টে শেয়ার কিনতে পারবেন।
বৈঠকে স্টেকহোল্ডাররা বাজারের সাম্প্রতিক অস্থিরতার পেছনে করোনা পরিস্থিতির অবনতি এবং বিনিয়োগকারীদের মনে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশংকাকে প্রধান কারণ হিসেবে তুলে ধরেন।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বাজারের সাম্প্রতিক দর পতনের পেছনে কোনো কারসাজি আছে কি-না তাদের জানা নেই। সব সময় তারা বাজার মনিটরিং করেন। এখনও করছেন। সব কিছুই পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকের বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আগামি এপ্রিল মাস থেকে আইপিওতে নতুন নিয়ম চালু হতে যাচ্ছে। যে নিয়মে আইপিওতে আবেদনের ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। এরফলে আগামি আইপিওর আগেই বাজারে হাজার কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ ঢুকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, গড়ে প্রতিটি আইপিওতে প্রায় ১০ লাখ আবেদন জমা পড়ে। যার অধিকাংশ বিও হিসাবেই কোন বিনিয়োগ থাকে না। কিন্তু আগামিতে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। এরফলে অর্ধেক বিও হিসাবে ২০ হাজার করে বিনিয়োগ করলেও হাজার কোটি টাকা ঢুকবে বাজারে। তাই বিনিয়োগকারীদেরকে এ বিষয়টি জানানোর জন্য আজকের বৈঠকে ব্রোকারদেরকে বলা হয়েছে।
ব্যাংক বন্ধ ছাড়া পুঁজিবাজার বন্ধ হওয়ার সুযোগ নেই বলে ব্রোকারদেরকে আজ কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বলে জানান এই নির্বাহি পরিচালক। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো, ভবিষ্যতে ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজার বন্ধ থাকবে না। তাই পুঁজিবাজার বন্ধ হওয়ার গুজবে কান দেওয়ার কোন সুযোগ নেই।